নিউটনের তিনটি গতিসূত্র এর বিস্তারিত আলোচনা

Newton's law of motion

Website Name:-www.ourbook.in

স্যার আইজাক নিউটন এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

ইংল্যান্ডের উল্‌সথর্প নামক গ্রামে স্যার আইজ্যাক নিউটন জন্মগ্রহণ করেন 1642 খ্রিস্টাব্দের 25 জিসেম্বর মাসে, জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী । আধুনিক গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী নিউটনের জন্ম 4 জানুয়ারি 1643 খ্রীষ্টাব্দে । তিনি কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজ থেকে ডিগ্রি লাভ করেন 1665 খ্রিস্টাব্দে । পরবর্তীকালে স্যার নিউটন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পদে যোগদান করেন 1669 খ্রিস্টাব্দে, তখন স্যার নিউটন এর বয়স হয়েছিল 27 বছর । এই মহান বিজ্ঞানীর মৃত্যু হয় 20 মার্চ 1727 সালে । রাষ্ট্রীয় সম্মানের সঙ্গে তাঁর শেষ কার্য সম্পন্ন করা হয় ।


সপ্তদশ শতাব্দীতে স্যার আইজ্যাক নিউটন ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ প্রতিভাবান এক জন পদার্থবিজ্ঞানী । কিন্তু আজও অনেকে মনে করেন তিনি হলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বিজ্ঞানী । স্যার আইজাক নিউটন পদার্থ বিজ্ঞানে যে অবদান রেখেছেন তা অতুলনীয় । স্যার আইজ্যাক নিউটন ছিলেন পদার্থবিজ্ঞানী, গণিত বিশারদ, জ্যোতির বিজ্ঞানী, আলোক বিজ্ঞানী এবং বহু বিষয়ে প্রতিভাবান এক জন জনপ্রিয় বিজ্ঞানী । নিউটন 1687 সালে তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ প্রিন্সিপিয়া প্রকাশ করেন । গণিতের এক নতুন শাখা ক্যালকুলাস তৈরি করেন স্যার নিউটন ও গটফ্রিড লাইবনিৎস এর যৌথ প্রচেষ্টায় । নিউটনের হাত ধরেই আসে দ্বিপদীয় উপপাদ্য ।


নিউটন কি আবিষ্কার করেন

নিউটনের প্রথম গতিসূত্র (Newton's first law of motion)


বাইরে থেকে বল প্রয়োগ না হলে স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকবে । আর গতিশীল বস্তু চিরকাল, সরলরেখা ধরে, সমবেগে চলতে থাকবে ।


নিউটনের প্রথম গতিসূত্রে মনে রাখতে হবে যে বিষয় গুলু :-

(i) নিউটনের প্রথম সূত্রে প্রথমেই বলা হয়েছে বাইরের থেকে বল প্রয়োগ না করিলে । এর অর্থ হলো যদি বস্তুর উপর বাইরের থেকে বল প্রয়োগ করি তা হলে নিউটনের সূত্র অনুযায়ী বস্তুর জাড্য ধর্মের পরিবর্তন হবে । তাই এখান থেকে আমরা বলের সংজ্ঞা ও জাড্য ধর্মের সংজ্ঞা পাই । বল কি জানতে এখানে ক্লিক করুন ।


(ii) নিউটনের প্রথম সূত্রে স্থির বস্তুর ক্ষেত্রে আমাদের একটি বিষয় লক্ষ রাখতে হবে ৷ তা হলো বস্তুটি চিরকাল স্থির থাকবে ৷ অর্থাৎ বস্তুটির কোনো স্থান পরিবর্তন হবে না ৷ যে স্থানে থাকবে সেই স্থানেই থাকবে আজীবন বা চিরকাল ৷ বস্তুটিকে সরাতে গেলে বাইরের থেকে বল প্রয়োগ করতে হবে ৷


(iii) নিউটনের প্রথম সূত্রে গতিশীল বস্তুর ক্ষেত্রে আমাদের তিনটি বিষয় লক্ষ্য করতে বা মনে রাখতে হবে ৷ সে গুলি হল (A)চিরকাল, (B)সরলরেখা ধরে, (C)সমবেগে চলতে থাকা


(A)চিরকাল:- আমরা মনে করি কোনো গতিশীল বস্তু চলিতে চলিতে এক সময় স্তব্ধ বা স্থির হয়ে যাবে ৷ কিন্তু সেটা প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী সম্ভব নয় ৷ গতিশীল বস্তুটিকে স্থির করতে গেলে বাইরে থেকে বল প্রয়োগ করতে হয় ৷ আমাদের পৃথিবীর উপর গতিশীল বস্তুর় চলমান অবস্থা স্থির হয়, কারণ পৃথিবী বস্তুটির ওপর মার্ধ্যাকর্ষন বল প্রয়োগ করে ৷ যদি পৃথিবী বস্তুটির ওপর মার্ধ্যাকর্ষন বল প্রয়োগ না করিত তা হলে বস্তুটি গতিশিল থাকিত ৷


(B)সরলরেখা ধরে:- চলমান কোনো বস্তুকে বাঁকাতে গেলে অর্থাৎ সরলরেখার চলার পথ পরিবর্তন করাতে হলে পাশ থেকে বল প্রয়োগ করিতে হয় ৷ তা না হলে চলমান বস্তু বাঁকবে না ৷ আমরা যখন সাইকেল চালাই তখন সাইকেলের চলার সজা পথ পরিবর্তন করিতে হলে সাইকেলের হেন্ডেলের উপর বল প্রয়োগ করে দিক পরিবর্তন করতে হয় ৷ এখানে সাইকেল চলমান , কিন্তু হ্যান্ডেল এর ওপর বল প্রয়োগ করে সোজা রাস্তা বা দিক পরিবর্তন করি ৷ তাই এখানে সরলরেখা বলা হয়েছে ৷


(C)সমবেগে চলতে থাকা:- নিউটনের প্রথম গতিসূত্রে উল্লেখ করা হয়েছে সমবেগে চলা ৷ সমবেগ বলতে বোঝায় সমান বেগ ৷ অর্থাৎ জড় বস্তু যে বেগে চলবে সেই বেগেই চলিতে থাকিবে ৷ গতিবেগের বৃদ্ধি হবে না আর কমবেও না ৷ কারণ বস্তুটির গতিবেগ বৃদ্ধি বা বাড়াতে গেলে ও হ্রাস বা কমাতে গেলে বাইরের থেকে বল প্রয়োগ কারিতে হবে ৷

নিউটনের প্রথম সূত্র ব্যাখ্যা


নিউটনের প্রথম সূত্র উদাহরণ


নিউটনের প্রথম সূত্র থেকে কিসের ধারণা পাওয়া যায় | নিউটনের প্রথম সূত্র থেকে (i) বস্তুর জাড্য ধর্ম ও (ii)বলের ধারণা পেয়ে থাকি

বস্তুর বা পদার্থের জাড্য ধর্ম বলতে কি বোঝায়


জড় পদার্থ যে ধর্মের জন্য তার স্থিতি বা গতির অবস্থা বজাই রাখতে চাই সেই ধর্মকে ঐ পদার্থের জাজ্য ধর্ম বলে


স্থির জড় পদার্থ এর বর্ণনা:- অর্থাৎ স্থির জড় পদার্থ চিরকাল স্থির থাকতে চাই | আর গতিশিল জড় পদার্থ চিরকাল গতিশিল থাকতে চাই |স্থির বস্তুকে গতিশীল করতে হয় করতে হলে বাইরে থেকে বল প্রয়োগ করিতে হয় | আর ঐ স্থির বস্তু গতিশীল হতে চাই না |স্থির বস্তুর ক্ষেত্রে গতিশীল হতে না চাওয়াই হলো স্থির বস্তুর জাড্য ধর্ম |অর্থাৎ বলের বিরুদ্ধে একটি বাধা সৃষ্টি করে এবং স্থির থাকতে চাই |


গতিশীল পদার্থ এর বর্ণনা:- আর গতিশীল বস্তুকে থামাতে গেলে গতি বৃদ্ধি বা দিক পরিবর্তন করতে গেলে বাইরের থেকে বল প্রয়োগ করতে হয় |কিন্তু গতিশীল বস্তু স্থির হতে গতি বৃদ্ধি হতে বা দিক পরিবর্তন করতে চাই না |এই না চাওয়া হলো গতিশীল বস্তুর জাড্য ধর্ম |অর্থাৎ গতিশীল বস্তু উক্ত অবস্থার পরিবর্তনে বাধা সৃষ্টি করে | এই বাধার বিরুদ্ধে বল প্রয়োগ করতে হয় |স্থির বা গতিশীল বস্তুর অবস্থান পরিবর্তনের জন্য বাধা দেওয়াই হলো ঐ বস্তুর জাড্য ধর্ম |


জাড্য ধর্ম হলো পদার্থের মৌলিক ধর্ম |

পদার্থের জাড্য ধর্মকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়


পদার্থের জাড্য ধর্মকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় | (i) স্থিতি জাজ্য ও (ii) গতি জাড্য


কোনো জড় পদার্থ যখন স্থির অবস্থায় থাকে তখন ঐ পদার্থটি স্থির অবস্থাতেই থাকতে চাই একেই স্থিতি জাড্য বলে


একটি সহজ গল্পের মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা করি:- পদার্থের স্থিতি রাজ্যের উদাহরণ আমরা সহজেই বুঝতে পারি | কেননা এটি অনেক সময় আমাদের ভালো ভাবে দৃষ্টি গোচর হয় |উদাহরণ সরুপ বলা যেতে পারেস্কুলের গেটের সামনে রাস্তার ধারে একটি বড় পাথর পড়ে আছেযখন আমি ক্লাস ফাইবে পড়ি ও স্কুল যায় ও আসি | এমনি করে আমি ক্লাস সেভেনের উঠলাম তবুও দেখি ঐ পাথর ঐ জায়গায় আছে এতটুকুনো স্থান পরিবর্তন হয় নি |


স্থিতি জাড্যের উদাহরণ :- (i) ধরো তুমি একটি স্থির বাসের মধ্যে দাড়িয়ে আছো ।এবং বাসটি হঠাৎ চলতে শুরু করলো, তোমার মাথা তখন পিছন দিকে হেলে পড়বে।কারণ, বাসটি যখন স্থির ছিল তখন তুমিও স্থির ছিলে,বাসটি হঠাৎ চলতে শুরু করলে বাসের সঙ্গে আটকানো তোমার পা চলন্ত বাসের সঙ্গে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে,কিন্তু স্থিতি-জাড়া ধর্মের জন্য দেহের উপরের অংশ আগের জায়গাতেই স্থির থাকতে চায়, ফলে তুমি পেছন দিকে হেলে পড়বে।


(ii) একটি গ্লাসের উপর একটি পোস্টকার্ড রেখে ঐ পোস্টকার্ড এর উপর একটি পয়সা রাখা হল ৷ কার্ডটিকে হঠাৎ আঘাত করলে কার্ডটি সরে যাবে, কিন্তু পয়সাটি গ্লাসে পড়ে যাবে স্থিতি-জাড্য ধর্মের জন্য । কারন পয়সাটি একই জায়গায় বা একই স্থানে থাকতে চাই I এটাই স্থিতি-জাড্য এর ধর্ম l


(iii)একটি কম্বলের গায়ে লেগে থাকে অনেক ধূলিকণা I কম্বলটিকে একটি লাঠির সাহায্যে আঘাত করা হলো । দেখা যাবে কম্বলের গায়ে লেগে থাকা ধূলিকণাগুলি নিচের দিকে মাটিতে পড়তে থাকবে l কারণ এই ধূলিকণাগুলি স্থিতি-জাড়া ধর্মের জন্য স্থির অবস্থানেই থাকতে চাই, ফলে কোন অবলম্বন না পেয়ে নিচে পড়ে যায়।


কোনো চলমান বা গতিশিল পদার্থ যখন চলমান অবস্থায় থাকে তখন ঐ পদার্থটি চলমান অবস্থা বজাই রাখতে চাই বা গতি অবস্থাতেই থাকতে চাই একেই গতি জাড্য বলে


গতি জাড্যের উদাহরণ :- (i) ধরো একটি চলন্ত বাসের মধ্যে তুমি কিছু না ধরে দাঁড়িয়ে আছে। এখন বাসটি যদি হঠাৎ করে থেমে যায়, তা হলে দেখা যাবে যে, তোমার মাথা সামনের দিকে হুমড়ি খেয়ে ঝুকে পড়বে। এর কারণ হিসেবে বলা যায়, বাসটি গতিশীল থাকার সময় তোমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত সমস্ত দেহ গতিশীল অবস্থায় ছিল। বাসটি হঠাৎ থেমে যাওয়ায় বাসের সঙ্গে আটকানো পা-দুটি স্থির অবস্থায় আসে, কিন্তু দেহের উপরের অংশ অর্থাৎ মাথার দিক গতি-জাড্য ধর্মের জন্য তখনও গতিশীল অবস্থায় থাকতে চায়, তাই সামনের দিকে এগিয়ে যায়, ফলে তুমি সামনের দিকে হুমড়ি খেয়ে পড়ে।


(ii) চলন্ত টেন গাড়ি থেকে আমরা যখন নামি, তখন পেছন দিকে হেলে নামি। কারণ চলন্ত টেন গাড়ির মধ্যে থাকার সময় আমাদের দেহ গতিশীল থাকে। চলন্ত টেন গাড়ি থেকে প্লাটফর্ম এ আমাদের পা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পা প্লাটফর্ম স্পর্শ করে এবং স্থির হয়ে যায় । কারন প্লাটফর্ম স্থির ও টেন গাড়িগতিশিল । কিন্তু দেহের উপরের অংশ অর্থাৎ মাথা দিক তখনও গতিশীল অবস্থায় থাকে এবং সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই, কারন গতি-জাড়া ধর্মের জন্য। পেছন দিকে হেলে না নামলে আমরা সামনের দিকে হুমড়ি খেয়ে পড়তে হয়। এটা বন্ধ করার জন্য পেছন দিকে হেলে নামতে হয়। এর ফলে দেহের উপরের অংশ কিছুদূর এগিয়ে স্থির হয়ে যায়, ফলে সামনের দিকে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।


(iii) ঘরের মধ্যে পাখা ঘুরছে l এমন সময়ে পাখার সুইচ বন্ধ করা বা কারেন্ট পালিয়ে গেলো, দেখা যাবে পাখাটি সঙ্গে সঙ্গে স্থির হয়ে যাবে না l অনেকক্ষণ ঘোরার পর এক সময় স্থির অবস্থায় আসবে। কারন সুইচ বন্ধ করলেও বা কারেন্ট পালিয়ে গেলেও পাখাটি ঘুরতে থাকে| কারন গতি-জাড্য ধর্মের জন্য পাখা গতিশীল থাকতে চাই।


(iv) সমবেগে চলন্ত গাড়ির মধ্যে আমি একটি বলকে সোজা উপরের দিকে ছুঁড়ে দিলাম। দেখা যাবে বলটি কিছুক্ষণ পর আবার আমার হাতে এসে পড়বে, যদিও এই সময়ের মধ্যে আমি সামনের দিকে কিছুটা এগিয়ে যাবো। এর কারণ হল গাড়িটি গতিশিল, তাই গতি জাড্য ধর্মের জন্য বলটি উপরে থাকার সময় সামনের দিকে গতিবেগ বজায় রাখবে, ফলে একই সময় বল এবং আমি একই পথ অতিক্রম করবো । তাই বলটি আবার আমার হাতে এসে পড়বে।

বলের সংজ্ঞা :-বাইরে থেকে যা প্রয়োগ করে স্থির বস্তুকে গতিশীল ও গতিশীল বস্তুকে স্থির, বেগ বৃদ্ধি, বেগ কমানো, দিক পরিবর্তনের করা হয় বা করার চেষ্টা করা হয় তাকে বল বলে


কোনো জড় বস্তু নিজে থেকে তার স্থিতি অবস্থা ও গতি অবস্থা পরিবর্তন করতে পারে না । পরিবর্তন করাতে হলে কিছু প্রয়োগ করতে হয় ঐ বস্তুটির ওপর । বস্তুটির উপর কিছু প্রয়োগ না করিলে বস্তুটির অবস্থা পরিবর্তন সম্ভব নয় ।


বল ভেক্টর রাশি, কারণ বলের মান ও অভিমুখ দুই আছে ।


এখন যদি প্রশ্ন করা হয় নিউটনের কোন সূত্র থেকে বলের সংজ্ঞা পাওয়া যায়, তা হলে আমরা বুঝতে পারছি নিউটনের প্রথম গতিসূত্র থেকে বলের সংজ্ঞা পাওয়া যায় । কারণ বস্তুর উপর বল প্রয়োগ না করিলে বস্তুর অবস্থা পরিবর্তন হয় না ।

নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র (Newton's second law of motion)


কোনো বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার বস্তুটির উপর প্রয়ুক্ত বলের সমানুপাতিক , অর্থাৎ প্রযুক্ত বল যেদিকে ক্রিয়া করে ভরবেগের পরিবর্তনের হার সেই দিকেই হয় ।


নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র থেকে আমরা (i) বস্তুর ভরবেগ সমন্ধে ধারনা, (ii) বলের পরিমাপের ধারনা , (iii) বলের একক

ভরবেগ


ভরবেগ কাকে বলে


বস্তুর ভর ও বেগের সমন্বয়ে গঠিত কোন বস্তুতে যে গতি সৃষ্টি হয় তাকে ঐ বস্তুর ভরবেগ বলে । অর্থাৎ আমরা বলতে পারি ভরবেগ = ভর × বেগ


ভরবেগ ভেক্টর রাশি, কারণ বলের মান ও অভিমুখ দুই আছে ।


একটি ছোট উদাহরণের মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা করি :- ধরো তিনটি লোহার বল সমতল ভূমিতে গড়িয়ে দিলাম । বল গুলোকে আমরা প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বল বলে চিহ্নিত করবো । প্রথম বলের ভর 10 কিলোগ্রাম, ও বেগ 2 মিটার/সেকেন্ড, অতএব ভরবেগ হবে ⇉ ভর 10 কিলোগ্রাম × বেগ 2 মিটার/সেকেন্ড = 20 কিলোগ্রাম মিটার/সেকেন্ড । দ্বিতীয় বলের ভর 4 কিলোগ্রাম, ও বেগ 5 মিটার/সেকেন্ড , অতএব ভরবেগ হবে ⇉ ভর 5 কিলোগ্রাম × বেগ 4 মিটার/সেকেন্ড =20 কিলোগ্রাম মিটার/সেকেন্ড । তৃতীয় বলের ভর 3 কিলোগ্রাম, ও বেগ 12 মিটার/সেকেন্ড , অতএব ভরবেগ হবে ⇉ ভর 3 কিলোগ্রাম × বেগ 12 মিটার/সেকেন্ড =36 কিলোগ্রাম মিটার/সেকেন্ড । এখন এই তিনটি লোহার বল গড়াতে গড়াতে একটি দেওয়ালে এসে ধাক্কা খেলো । দেখা যাবে প্রথম ও দ্বিতীয় বল দেয়ালে একই পরিমাণ ক্ষতি করবে, কারণ প্রথম ও দ্বিতীয় লোহার-বলের ভরবেগ সমান হবে । আর তৃতীয় লোহার-বল বেশি ক্ষতি করবে । কিন্তু তৃতীয় লোহার-বল এর ওজন কম, বেগ বেশি হওয়ার জন্য ভরবেগ বেশি অন্যান্য লোহার-বল এর ভরবেগ এর তুলনায় l


ভরবেগের একক
এস. আই পদ্ধতিতে 1 কিলোগ্রাম × 1 মিটার/সেকেন্ড = 1 কিলোগ্রাম মিটার/সেকেন্ড
সি. জি. এস. পদ্ধতিতে 1 গ্রাম × 1 সেমি/সেকেন্ড = 1 গ্রাম সেমি/সেকেন্ড

নিউটনের তৃতীয় গতিসূত্র (Newton's third law of motion)


প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে ।


নিউটনের তৃতীয় সূত্র উদাহরণ

বেক্ষা :- অর্থাৎ আমরা কোনো বস্তুকে যতটা বল প্রয়োগ করবো ঐ বস্তুও আমাদেরকে ততটা বল প্রয়োগ করবে | উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি একটি রাবারের বলকে দেওয়ালে দিকে ছুড়ে মারলাম | দেওয়ালো ঐ রাবারের বলকে আমার দিকে সমান বল প্রয়োগ করে ছুড়ে মারবে | অর্থাৎ আমি যে বল প্রয়োগ করেছি দেওয়ালো একেই রকম বল প্রয়োগ করেছে | আমার বল = দেওয়ালো এর বল